নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ২৬ অগাস্ট, ২০১৭
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা, সম্প্রতি তাঁর নেতৃত্বে দেওয়া রায় নিয়ে সৃষ্ট বিতর্কে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টের রায়ের উদাহরণ দিয়েছেন। পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট কদিন আগেই এক রায়ে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নওয়াজ শরিফকে অযোগ্য ঘোষণা করেছে। অযোগ্য ঘোষণা সংক্রান্ত রায়ের শুরুই হয়েছে ‘গডফাদার’ উপন্যাসের কথা দিয়ে, নওয়াজ শরিফকে তুলনা করা হয়েছে ‘গডফাদার’ এর সঙ্গে। বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি যেহেতু পাকিস্তান প্রসঙ্গ এনেছেন, তাই ওই রায়ের সূত্র ধরেই প্রশ্ন জাগে, প্রধান বিচারপতির ‘গডফাদার’ কে?
অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রধান বিচারপতির পেশাগত গুরু হলেন, ড. কামাল হোসেন। তাঁর ঘনিষ্ঠতম বন্ধু হলেন অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী। সিলেট থেকে ঢাকায় এসে বিচারপতি সিনহা বিশিষ্ট আইনজীবী সবিতা রঞ্জন পালের চেম্বারে কাজ শুরু করেন। তাঁকে হাইকোর্টের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগের জন্য বিচারপতি সাহাবুদ্দিনের কাছে সুপারিশ করেন ড. কামাল হোসেন। ওয়ান ইলেভেনের সময় যখন দুর্নীতির অভিযোগে তাঁকে বিচারপতি থেকে অপসারনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, তখনো তাঁকে বাঁচান ড. কামাল হোসেন। ড. ফখরুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করে বিচার বিভাগে শুদ্ধি অভিযান শুরু করে। সেই শুদ্ধি অভিযানে দুর্নীতিবাজ বিচারপতিদের তালিকা প্রনয়ণ করা হয়। এদের এক এক করে অপসারণের প্রক্রিয়াও শুরু হয়। বিচারপতি সিনহাকেও চায়ের দাওয়াত দেওয়া হয়েছিল বঙ্গভবনে। কিন্তু তিনি পালিয়ে বাঁচেন। এ সময় ড. কামাল হোসেনের হস্তক্ষেপে তিনি বেঁচে যান।
ষোড়শ সংশোধনীর রায়ের ব্যাপারে ড. কামাল হোসেনের ভূমিকাই ছিল গুরুত্বপূর্ণ। রায়ে বিচারপতি সিনহা ড. কামাল হোসেনের উপস্থাপনা থেকেই বেশিটা অংশ নিয়েছেন। সম্প্রতি ড. কামাল হোসেন এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘এই রায় থেকে একটি শব্দও বাদ দেওয়া অসম্ভব, তাঁর এই মন্তব্যের পর নতুন করে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। রায় পরিমার্জন করা যাবে কিনা, এ নিয়ে ড. কামাল কথা বলার কে? – এ প্রশ্ন তুলছেন বিভিন্ন মহল।
শুধু এই রায় নয়, ড. কামাল আপিল বিভাগে আলাদা খাতির পান। এইতো ক’দিন আগেই প্রকাশ্য এজলাসে ড. কামাল হোসেন অ্যাটর্নি জেনারেলকে ‘বাস্টার্ড’ বলে গালি দিলেন। অথচ আপিল বিভাগ এরকম ‘অসদাচরণ’ আমলে নিলো না। গত ২৪ আগস্ট এক অনুষ্ঠানে ড. কামাল হোসেন রায়ের পক্ষে সাফাই গেয়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে, বর্তমান সংসদের ১৫৪ জন এমপির বিনা নির্বাচনে সংসদ সদস্য হওয়ার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে এক রিট আবেদন খারিজ হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে করা ওই রিট নিয়ে ড. কামাল হোসেন ছুটির পরই আপিল বিভাগে যাবেন বলে নিশ্চিত তথ্য পাওয়া গেছে। সেখানে ড. কামালের আবেদনের ভিত্তি হবে ষোড়শ সংশোধনীর রায় নিয়ে দেওয়া আপিল বিভাগের পর্যবেক্ষণ। আপিল বিভাগ যদি রায় দেয়, সংসদ সদস্যরা অবৈধ তাহলে শুধু এই সংসদ নয়, গণতন্ত্রও বিপন্ন হবে। সেজনই কি এত আয়োজন? ড. কামাল কি প্রধান বিচারপতির ঘাড়ে বন্দুক রেখে গুলি করতে চাইছেন গণতন্ত্রকে?
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জেলা প্রশাসক সম্মেলন প্রধানমন্ত্রী
মন্তব্য করুন
সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে একটি চালকলে ধান সিদ্ধ করার সময় বয়লার বিস্ফোরণে এক শ্রমিকে মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরও দুই শ্রমিক। শুক্রবার (৩ মে) ভোর সাড়ে ৪টার দিকে জামতৈল পশ্চিম পাড়ার মেসার্স আজাহার চালকলে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ফজল আলী (২৬) উপজেলার জামতৈল পশ্চিম পাড়ার রবিয়াল হোসেনের ছেলে।
আহত শ্রমিকরা হলেন, উপজেলার জামতৈল পশ্চিম পাড়ার মৃত পলান শেখের ছেলে জহুরুল শেখ (২৬) এবং কর্ণসূতি পশ্চিম পাড়ার মৃত সুরুত মন্ডলের ছেলে জিন্নাহ মন্ডল (৩০) ।
আহত শ্রমিক জহুরুল শেখ জানান, ‘ধান সিদ্ধ করার এক পর্যায়ে ভোর সাড়ে ৪ টার দিকে বিকট শব্দে বয়লার বিস্ফোরণ হয়। এতে আমি সহ ফজল ও জিন্নাহ আহত হই। আমি আর জিন্নাহ হাসপাতালে ভালো চিকিৎসা না পেয়ে বাড়িতে চলে এসেছি আর ফজলের অবস্থা খুবই খারাপ হওয়ায় তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়।’
জহুরুল আরও জানান, ‘আমি গত এক বছরের বেশি সময় ধরে এই চালকলে কাজ করছি। এর মধ্যে বয়লারের পাইপ পরিবর্তন করা হলেও বয়লার পরিবর্তন করা হয়নি।'
মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে নিহত ফজলের ভাই আসলাম হোসেন জানান, ‘মেসার্স আজাহার চালকলে ধান সিদ্ধ করার এক পর্যায়ে বয়লার বিস্ফোরণে ফজল গুরুতর আহত হয়। প্রথমে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর সেখানকার চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।'
মেসার্স আজাহার চালকলের স্বত্বাধিকারী আজাহার আলী রাজা দাবি করেন, ‘গত ছয় মাস আগে বয়লার ও কয়েক দিন আগে বয়লারের পাইপ পরিবর্তন করা হয়েছে। বয়লার কেন বিস্ফোরণ হলো বুঝতে পারছি না।’
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. সুমনুল হক জানান, ‘বয়লার বিস্ফোরণে আহত তিন জন শ্রমিককে হাসপাতালে আনা হয়েছিল। দুই জনকে সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়ে। এদের মধ্যে ফজল নামে একজন শ্রমিকের মুখের অনেকাংশ থেঁতলে গেছে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহীন সুলতানা জানান, ‘মেসার্স আজাহার চালকলে বয়লার বিস্ফোরণের খবর পেয়েছি। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।'
মন্তব্য করুন